• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পঁচা ইটখোয়া দিয়ে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ

  • ''
  • প্রকাশিত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মাদারীপুর প্রতিনিধি:

মাদারীপুরের কালকিনিতে পৌর মেয়রের প্রশ্রয়ে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে একটি সড়কের নির্মাণ কাজে পঁচা ইট ও খোয়া দিয়ে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। এই বিষয়ে ঠিকাদারের প্রতিনিধিরা বলছেন, সড়কটিতে পঁচা ইট খোয়া দিয়ে নির্মাণ করলে পাথরের কার্পেটিং ভাল হবে। তবে এই বিষয়ে পৌর মেয়র ঠিকাদারের পক্ষ নিয়ে দাবী করে বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ সঠিক নয়। ঠিকাদার ভাল ভাবে কাজ করছেন বলে দাবী করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘লোকাল গর্ভরমেন্ট কোভিট-১৯ রেসপন্স এন্ড রিকভারি’ প্রকল্পের আওতায় কালকিনি-ভুরঘাটা বিসি রোড (রেন্ডিতলা) থেকে আলমগীর উকিলের বাড়ি পর্যন্ত ৯’শ মিটার সড়কের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নের জন্য কালকিনি পৌরসভার সাথে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস.এস এন্টারপ্রাইজের সাথে ৩৪ লাখ ৭ হাজার ৯’শ ৫ টাকার চুক্তি হয়। চুক্তি অনুসারে চলতি বছরের ৬ জুলাই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়কটি নির্মাণের কাজ শুরু করে। যা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৪ সালের ৫ জুন। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংকের এই প্রকল্প থেকে বেশি মুনাফার উদ্দেশ্যে সড়কটিতে অতি নিম্নমানের ইট ও খোয়া বিছিয়ে কার্পেটিং করছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বাসার বলেন, ‘রাস্তাটি অনেক বছর ধরেই ভাঙ্গা চোরা ছিল। কিন্তু এখন পৌরসভা থেকে রাস্তাটি নতুন করে নির্মাণ করা হলেও খুবই পঁচা মানের ইট খোয়া দিয়ে বানানো হচ্ছে। ইটের খোয়া এতই পঁচা যে তা হাত দিয়ে চাপ দিলেই খোয়া গলে যায়।’

একই এলাকার আরেক বাসিন্দা মোহম্মদ ফারুক হোসেন দাবী করেছেন, ‘এই কাজের ঠিকাদার পৌর মেয়রের ঘনিষ্ট লোকজন। তাই তিনি সড়কটি টেকসই করে মেরামতের জন্য কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বিদেশী টাকা লুটপাট করে খাওয়ার একটা ধান্ধা ছাড়া আর কিছুই না। এই সড়কও বেশিদিন টিকবে না।’

এই এলাকার ষাটোর্ধ্ব বাসিন্দা জয়নাল হোসেন বলেন, ‘ঠিকাদারা যখন ইট বিছায় রাস্তায়, তখন আমরা নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তারা শোনেনি। ঠিকাদারের লোকজন বলে, পঁচা ইট খোয়া রাস্তা বানালে রাস্তার ফিনিশিং ভাল হয়। তাই এই নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করি নাই। বেশি বাড়াবাড়ি করলে ঠিকাদার পৌর মেয়রের লোক। পরে আবার আমাগো নানান ধরনের বিপদে মধ্যে ফেলাই দেবে। তাই ভয়ে কিছু আর বলি নাই।’
এই বিষয়ে মাদারীপুর সামাজিক আন্দোলন পরিষদের সভাপতি মো.জাহিদ হোসেন অনিক বলেন,‘বিদেশী অর্থায়নে তৃণমূল মানুষের জীবন মান উন্নয়নের জন্য সরকারের সড়ক নির্মাণের প্রকল্পে নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে নির্মাণের ফলে সড়কটি যেমন টেকসই হবে না। তেমনি ভাবে সরকারের এই সুন্দর উদ্যোগটিও ব্যর্থ হবে। তাই আমি দাবী করছি, সড়কটি উন্নত মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে তৈরী করা হোক। পাশাপাশি এই প্রকল্পের নজরদারির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসা হোক।’

নিম্ন মানের মালামাল ব্যবহার করে সড়ক নির্মাণের বিষয়টি জানতে চাইলে ঠিকাদারের প্রতিনিধি মো.সাইফুদ্দিন বলেন, ‘আমরা সড়কের কাজে কোন নিম্ন মানের ইট খোয়া ব্যবহার করি নাই। রাস্তা যাতে ভাল মানের হয় সেভাবেই কাজ করেছি।’-তবে পৌর মেয়র ঠিকাদারকে প্রশ্রয় দেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, এলাকাবাসী সড়কে নিম্নমানের ইট খোয়ার যে অভিযোগ তুলেছে তা সঠিক নয়। ঠিকাদার ভাল ভাবেই কাজ করছে।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads